‘ডাক দিয়েছে আপন প্রান্তর, এসো মিলি প্রাণে প্রাণে’ স্লোগানকে ধারণ করে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার শিক্ষার বাতিঘর হিসেবে পরিচিত মধ্যনগর বিশ্বেশ্বরী পাবলিক উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের শতবর্ষপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে দিনব্যাপী প্রতিষ্ঠানটির মাঠে এ অনুষ্ঠানটি অনুষ্টিত হয়।দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিলন মেলায় অনুষ্ঠানটি যেন আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
শতবর্ষপূর্তি উৎসব উদ্যাপন পরিষদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের তৎকালীন জমিদার ব্রজেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী তাঁর মা বিশ্বেশ্বরী রায় চৌধুরীর নামের সঙ্গে মিল রেখে ১৯২০ সালে উপজেলার মধ্যনগর বাজারে উক্ত স্কুলটিকে মধ্যনগর বিশ্বেশ্বরী মাইনর স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে এটি বিশ্বেশ্বরী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় এবং ১৯৯৫ সালে এটি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে উন্নীত হয়। প্রতিষ্ঠানটির আয়তন ১৩ একর ৭৯ শতক।১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটির শতবর্ষ উদযাপন ২০২০ সালে হওয়ার কথা থাকলেও কভিড-১৯ সহ নানান কারণে উদযাপন করা সম্ভব হয়নি।অনুষ্ঠানে অংশ নিতে অনলাইনে প্রাক্তন ১ হাজার ২৬৩ জন ও বর্তমান ১ হাজার ৬৯৩ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেন বলে জানা গেছে।পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এসে বন্ধুদের খোঁজে ব্যাস্ত সময় পার করছেন তরুণ,যুবক এমনকি প্রবীণরাও।ব্যাচভিত্তিক মেতে উঠছেন আড্ডায়।দীর্ঘদিন পর দেখা পেয়ে স্মৃতিচারণ করছেন তারা।এমন আনন্দময় মুহূর্ত ধারণ করে রাখতে ছবি তুলে রাখছেন মুটোফোন এবং ক্যামেরায়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি এই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। আমাকে প্রধান অতিথি করা না হলেও প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে এই অনুষ্ঠানে আসতাম।এই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করার জন্যে আমিও নিবন্ধন করেছি। এসব অনুষ্ঠানে কোলাহল হবে, আড্ডা হবে, ভাববিনিময় হবে, এটাই স্বাভাবিক। আমার পক্ষে প্রতিষ্ঠানের জন্য যা যা করণীয়, তা–ই করতে আমি চেষ্টা করব।’ এসময় তিনি এই প্রতিষ্ঠানের নতুন ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বন্ধনের জন্য অ্যালামনাই গঠন করার প্রস্তাব করেন।
প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন সহকারী প্রধান শিক্ষক ও শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের আহবায়ক বসন্ত কুমার বিশ্বাস। তিনি বক্তব্যকালে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন,’দীর্ঘদিন ধরে এই অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।অবশেষে অনুষ্ঠানটি হচ্ছে।আমরা ব্যর্থ হইনি।এর আনন্দ বলে বুঝানো যাবে না।’এসময় তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
Devoloped By WOOHOSTBD