— ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা
পর্দা সকল ধর্মেই রয়েছে এটা আমরা হয়ত সঠিকভাবে জানিনা বলে আজ আমরা ভুলের মধ্যে লিপ্ত। আসুন আমরা কোন হুজুর কি বললো, কোন গুরু গোসাই কি বললো সেদিকে লক্ষ না করে নিজ নিজ ধর্মীয় গ্রন্থ মন দিয়ে পড়ে বুঝতে চেষ্টা করি এবং ধর্ম
গ্রন্থে যা বলে তাই মেনে চলার চেষ্টা করি যাতে করে পরকালের জীবন টা সুন্দর হয়। ক্ষণিকের দুনিয়ার মোহে পড়ে পরকালের কঠিন আজাব কে ভুলে না যায়।
আসুন জেনে নি পর্দা সম্পর্কে হিন্দু ধর্মের ইতিহাস কি বলে- হিন্দু সভ্যতার সময় হিন্দু মহিলাগণও পর্দা করেছে। বর্তমান হিন্দু মহিলার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ঘোমটা এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত –
ঋগ বেদে আছে, “হে নারী! তুই নীচে দৃষ্টি রাখ, ঊর্ধ্বে দৃষ্টি করিস না। আপন পদযুগল একত্রে মিলিয়া রাখ্। তোর নাক যেন কেউ দেখতে না পায়, যদি এমনি লজ্জাবতী হতে পারিস, তাহলে নারী হয়েও তুই সম্মানের পাত্রী হতে পারবি”।
“মহিলারা পুরুষদের মতো পোশাক পরিধান করবে না এবং পুরুষরাও তাদের স্ত্রীদের পোশাক পরিধান করবে না।” (ঋগে¦দ গ্রন্থ নং ১০ – অনুচ্ছেদ ৮৫ – পরিচ্ছেদ – ৩০)
হিন্দু ধর্মে নারীদের জীবন বিধান ও পর্দা যে কত কঠোর তার প্রমাণ পাওয়া যায় হিন্দুদের পবিত্র সংস্কৃত ধর্মগ্রন্থ মনুসংহিতায়-
১. “কি বালিকা, কি যুবতী, কি বৃদ্ধা কোন স্ত্রীলোকেরই নিজ গৃহেও স্বাধীনভাবে কোন কার্য করা উচিত নয়।” (স্ত্রী ধর্ম : ১৪৭)
২. “স্ত্রীলোক শৈশবে পিতার বশে, যৌবনে স্বামীর বশে এবং স্বামীর দেহান্তহইলে পুত্রদিগের বশে থাকিবে।” (স্ত্রী ধর্ম : ১৪৭)
৩. “স্ত্রীলোকগণ পিতা, স্বামী, পুত্রগণ হইতে বিভিন্ন থাকিতে ইচ্ছা করিবে না। যেহেতু স্ত্রী লোকেরা ইহাদের নিকট হইতে পৃথক থাকিলে অকার্যানুষ্ঠান দ্বারা পিতৃকুলও শ্বশুরকুল কলঙ্কিত করিতে পারে।” (স্ত্রী ধর্ম : ১৪৯)
৪. “স্ত্রী, পতির দেহান্তহইলে পবিত্র পুষ্প, ফল মূলাদি দ্বারা, স্বল্প আহার দ্বারা, ইচ্ছাক্রমে নিজ দেহ ক্ষীণ করিবে, পর-পুরুষের নাম পর্যন্তমনে গ্রহণ করিবে না।” (স্ত্রী ধর্ম : ১৫৭)
৫. “পতি নিদ্রিত হইলে, মনে মনে পতিকে চিন্তা করিতে করিতে তাহার পার্শ্বে নিদ্রা যাইবে। সেই সময় বিবস্ত্রা হইবে না, সতর্ক হইয়া শয়ন করিবে, অন্য কামনা-শূন্য (ঝবী) জিতেন্দ্রিয় হইয়া থাকিবে।” (স্ত্রী ধর্ম : ১৫৭)
(স্ত্রীগণ পর-পরুষের সাথে তো দূরের কথা, নিজ স্বামীর সামনেও বিবস্ত্রা হইতে পারিবে না।)
‘হিন্দু মনীষীদের উপদেশাবলী’ গ্রন্থের কয়েকটি উপদেশ নিম্নে সন্নিবেশিত হলো :
১. ওহে কুমারী সকল, তোমরা নিজেদেরকে বহু পুরুষের ভোগের বস্তুতে পরিণত করিও না।
২. তোমরা তোমাদের ঐ শরীরকে বহু পুরুষের চক্ষু-ইন্দ্রিয় হইতে সর্বদা আগলিয়া রখিবে।
৩. এমন স্থানে স্নান সমাপ্তি করিও যেখানে কোন পুরুষের দৃষ্টি নিবদ্ধ হইবে না।
পর্দা বিদ্বেষী লেখক মাহমুদ শামসুল হক তার ‘নারী কোষ’ বই এর ১৭৭-১৭৮ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, এক সময় হিন্দু নারীরাও মশারীর ভেতরে বসে গঙ্গাস্নানে যেত। ভারত বর্ষীয় হিন্দু-মুসলিম নারী অসুখেও ডাক্তার দেখাতো ঘেরা টোপের আড়াল থেকে।
হে আল্লাহ আমাদের সকলকে হেদায়েত দান করুন এবং সকল হিন্দুদের কে ও সঠিক বুঝ দান করুন, সঠিকভাবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার তৌফিক দান করুন।
Devoloped By WOOHOSTBD