• শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
লক্ষীপুর জেলা ডিবি পুলিশের এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ নেলসন ম্যান্ডেলা শান্তি পুরস্কার ২০২৪ পেলেন সুনামগঞ্জের রাকিব আলী সীতাকুণ্ডে সড়ক দূর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু  দৈনিক হালচাল পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাইফুল ইসলাম মধ্যনগরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই ব্যাবসায়ীকে জরিমানা ফ্রান্সে নানা আয়োজনে উদ্বোধন হলো বাংলা ম্যারেজ ব্যারো তাহিরপুরে নানা আয়োজনে প্রতিবন্ধী দিবস পালিত রাজনগরে মোটরসাইকেল পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ফাংশনের চরমমান অন্বেষণ: তত্ত্ব এবং প্রয়োগ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নিকট এনজিও সংস্থা আশার উদ্যোগে ৪ শতাধিক শীতবস্ত্র হস্তান্তর

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী এখন বাবুর্চি? খাবারের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন

Muntu Rahman / ৮৬ Time View
Update : সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৪

স্টাফ রিপোটারঃ

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তিকৃত রোগীদের খাবারের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে রোগী ও তাদের স্বজনরা । একইসাথে পাকশালার দায়িত্বে রয়েছে পরিছন্নতাকর্মী এমন ভয়ংকর রদ বদল, রমজান মাসে পরিচ্ছন্নতার কর্মী দিয়ে পাকশালার কাজ চলছে। হাসপাতালে জনবল প্রকট সংকট আকার ধারণ না করার পরেও একজনের স্থলাভিত্তিত্বে এই কাজ করা হচ্ছে মর্মে অনিয়মের চিত্র উঠেছে এসেছে৷
গত (৫ এপ্রিল ) দুপুর সাড়ে ১২টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাকশালায় কাজ করছেন মোছাঃ ছামছুন্নাহার, নামের একজন পরিছন্নতা কর্মী,যেখানে নিয়োগ প্রাপ্ত বাবুর্চি সাহেরা বেগম তাকে দিয়ে করানো হচ্ছে পরিছন্নতা কর্মীর কাজ।
হাসপাতালে কর্তব্যরত দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, পরিচ্ছন্নতা কর্মী কে দিয়ে রান্নার কাজ করে আসছেন,এটি মোটেও সমাচীন নয়৷ ৫০ শয্যার এ হাসপাতাল, জনবল সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, পাকশালার কাজ করেন সেখানকার পরিছন্নতা কর্মী,এবং বাবুর্চি বনে গেছেন পরিছন্নতা কর্মী।
স্বাস্থ্যসেবার এই অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী কে? পরিচ্ছন্নতা কর্মী এখন পাকশালার বাবুর্চি বনে গেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো অব্যবস্থাপনা আছে কি না তা দেখভালের দায়িত্ব মন্ত্রণালয় ও, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ও সিভিল সার্জনদের। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার অব্যবস্থাপনা দেখে মনে হয়, যেন এর দায়ভার কার উপরে বর্তায় না। পাকশালায় রান্নার কাজ পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে করানো হচ্ছে। জানা গেছে, নিয়োগ প্রাপ্ত সাহেরা বেগম বাবুর্চি কে দিয়ে পরিছন্নতার কাজ করানো হচ্ছে যেটি কর্তৃপক্ষের বেখেয়ালিপনা। তারা কি অন্ধ?
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের এই স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো পুরোপুরি সচল থাকলে এবং সঠিকভাবে কাজ করলে সাধারণ রোগীরা সঠিক সেবা পেত৷ সব কিছু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হতো। ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সাধারণ রোগীদের পাশাপাশি শতশত বয় বৃদ্ধ রোগীদের ভিড় থাকে এ হাসপাতালে।সেই সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে ডায়রিয়ার রোগী।

ওই হাসপাতালের প্রকৃত বাবুর্চি হিসেবে মের্সাস শারমিণ টের্ডাসের আউটসোসিং ২০-২১অর্থ বছরে বাবুর্চি হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত সাহারা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,, আমি দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালে চাকরি করে আসছি করোনার সময় আমি আক্রান্ত হলে লকডাউনে ছিলাম ওই সময় আমার পরিবারের লোকজন হাসপাতালে রান্না সরবরাহ করেছে ও পাকশালা মেরামতের সময় আমি আমার বাড়ি থেকে পাক করে হাসপাতালে নিয়ে রোগীদেরকে খাওয়াইছি আমি৷ তিন বছর যাবৎ বাবুর্চির চাকরি করেছি গত ১৫ দিন যাবত আমাকে সরিয়ে দিয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করানো হচ্ছে৷ আমার পদ পদবী বাবুর্চি আমার থাকার কথা পাকশালায়৷ যদি আমি কোন অপরাধ করে থাকি তার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ ৷ আমাকে বদল করে পরিছন্নতার কাজে দেওয়া হল কেন? ভর্তি রুগিও স্বজনদের অভিযোগ রয়েছে, খাবারের পরিমান স্বাদ এবং পুষ্টির মান নিম্নমানের। রোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের মাংস বলতে পোল্টি মুরগী আর সিলভারকার্প জাতীয় কম দামের খাবার নিত্যসঙ্গী। যা অনেক রোগী নিজ বাড়িতেও খান না। হাসপাতালে এসব খাবার খেতে বিপাকে পড়ছেন তারা।
গত ২৬ শে মার্চ মোমেনাসহ কয়েক জন রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, বরাবরই রোগীরা অভিযোগ করে যে হাসপাতাল থেকে সরবরাহকৃত খাবার সুস্বাদু হয় না। হাসপাতাল থেকে যে পরিমাণ বা মানের খাবার দেয়া হয় তার ওপর নির্ভর করা যায় না। অব্যবস্থাপনা ও নিম্নমানের রান্না খেতে না পেয়ে তাই বাধ্য হয়ে রিলিজ নিয়ে বাড়িতে আসছি৷
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ পরিচালিত দেশের সব সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের দৈনিক খাবারের বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ৫০ টাকা। অর্থাৎ প্রত্যেক রোগী দৈনিক ১২৫ টাকার পরিবর্তে সরকারের পক্ষ থেকে ১৭৫ টাকার খাবার পাচ্ছে। অর্থ বিভাগ গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সেটি গত ১০ অক্টোবর সারা দেশে বাস্তবায়ন করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালে রোগীদের সর্বশেষ ২০১৩ সালে খাবারের বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছিল। ওই সময় সাধারণ স্কেলের ডায়েটের দৈনিক বরাদ্দ ৫০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ১২৫ টাকা। তবে সেখান থেকে আবার ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কেটে দেয়া হতো মাত্র ১০৬ টাকা। এর আগে ২০০৯ সালে রোগীপ্রতি বরাদ্দ ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করা হয়। বর্তমানে ১৭৫ টাকা থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাদ দিলে থাকে ১৪৮ টাকা ৭৫ পয়সা। অর্থাৎ রোগীরা এ টাকায় দৈনিক তিনবেলা খাবার পাবে।
দেশের সরকারি হাসপাতালে রোগীদের সকালের খাবারে দেয়ার কথা ১৫০ গ্রাম পাউরুটি, চার ইঞ্চির একটি কলা, ২০ গ্রাম চিনি ও একটি ডিম। কলা না পেলে সেক্ষেত্রে অন্য কোনো ফল ও জেলি দেয়ার কথাও বলছেন একটি সরকারি হাসপাতালের পরিচালক। দুপুর ও রাতের খাবারে প্রতি বেলায় মাছ বা মাংস দেয়ার কথা রয়েছে। তবে এক কেজির রুই বা কাতল মাছ থেকে পিসের আকার হতে হবে ১৪০ গ্রামের। ২১২ গ্রাম ০৪ দশমিক মুরগির মাংস, ৩৪০ গ্রাম চাল। এছাড়া মসুর ডাল ও সবজি দেয়ার কথা বলা হয়েছে নির্দিষ্ট পরিমাণে। যদিও সরকার নির্দেশিত পরিমাণ খাবার দেয়া হয় না বলে অভিযোগ।
তবে রোগীর খাবার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। খাবারের জন্য প্রতিটি হাসপাতালের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা রয়েছে। দরপত্রের মাধ্যমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিদিনের খাবার সংগ্রহ করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জানানো প্রতিদিনের রোগীর সংখ্যার ভিত্তিতে সরবরাহকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান খাবারের আয়োজন করে৷
ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডঃ শেখ হাসিবুর রেজা বলেন, বাবুরর্চির জায়গায় পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়ে পাকশালার কাজ করানো হচ্ছে বিষয়টা আমি দেখতেছি৷ আজকে আমার মিটিং আছে মিটিং পর কথা হবে পরে তিনি বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে সাংবাদিকদের ফোন করে সংবাদ প্রকাশের জন্য নিষেধ করেন৷
হাসপাতালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মোঃ সিহাব সাংবাদিকদের বলেন৷ খাবারের পরিমান স্বাদ এবং পুষ্টির মান ভর্তি রুগিও স্বজনদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ এই অভিযোগ সঠিক না৷ আমি গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব৷
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জয়পুরহাট ২ জাতীয় সংসদ মাননীয় হুইপ আবু সাঈদ আলম মাহমুদ স্বপনের পক্ষে ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠদের নির্দেশনা দেয়া হবে৷


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Devoloped By WOOHOSTBD