মোঃ শহিদুল ইসলাম পিয়ারুল-স্টাফরিপোর্টার ঃ ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বোরো আমন ধানের বীজ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে। নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে রোববার (২৬ নভেম্বর) নান্দাইল উপজেলা পরিষদ হল রুমের সামনে ইউনিয়ন ক্যাম্পিং এর মাধ্যমে চলতি ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে বোরো আমন ধানের বীজ বিতরণ করা হয়। উপজেলার ৩ হাজার ৭০০ কৃষকের মাঝে জনপ্রতি ২ কেজি করে বোরো আমন ধানের বীজ বিতরণ করা হচ্ছে। তবে উক্ত বিতরণ কার্যক্রমে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম। একজন ব্যক্তির মাধ্যমেই উত্তোলন করা হয় ১০ জন ও ২০জন কৃষকের বীজ। যদিও জনপ্রতি কৃষকের ছবি ও স্বাক্ষর বা টিপসই প্রয়োজন রয়েছে, কৃষকের তালিকায় ছবি সংযুক্ত করা হলেও কৃষকের নামের পাশে স্বাক্ষর দিয়ে ধানবীজ নিয়ে যাচ্ছে অন্যরা। আবার বীজ উত্তোলনের পরপরই তা বিক্রী করে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন বীজ ব্যবসায়ীদের নিকট। সরজমিন পরির্দশনে জানাগেছে, বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত কৃষক পরিচয়ে নামধারী তথা ভূয়া কৃষকরা সরকারি ধান বীজ উত্তোলন করছেন। একাধিক ক্যাম্পিং ঘুরে দেখা গেছে, নান্দাইল ইউনিয়নের আব্দুল কদ্দুছ নামে এক ইউপি সদস্য তিনি একাই ২০ জন কৃষকের স্বাক্ষর করছেন। এছাড়া কৃষকের নামের পাশে একজন কৃষককে দিয়ে ১০ জন কৃষকের টিপসই গ্রহন করছেন। এরকমভাবে প্রতিটি ক্যাম্পেই চলছে ভূয়া স্বাক্ষরে কৃষকের নামে ধান বীজ উত্তোলন। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, বীজ উত্তোলন করতে আরো ২০/৩০ টাকা দিতে হচ্ছে। তবে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে বীজ বিতরণ করা হলে কৃষকদের জন্য সহজতর হতো। বীজ বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে ক্যাম্পিংয়ে দায়িত্বরত নান্দাইল ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (ব্লক সুপারভাইজার) বিলকিস আক্তার বলেন, কৃষকরা ২ কেজি বিতরণের জন্য আসতে চায় না। তাই মেম্বার স্বাক্ষর করে তাদের প্যাকেট গ্রহন করেছেন। তবে একজনের স্বাক্ষরের স্থানে অন্য কেউ স্বাক্ষর করা তা সঠিক কিনা জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, শুধু আমি না, আমার সাথে আরও দুইজন ছিল। আমি স্যারের সাথে কথা বলছি। ইউপি সদস্য আব্দুল কদ্দুছ বলেন, আমি অসুস্থ। মাথাব্যাথা করছে, এখন কিছু বলতে পারবো না। এ বিষয়ে বীজ বিতরণ কার্যক্রমের তদারকির দায়িত্বে থাকা নান্দাইল উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল হককে বিষয়টি জানালে তিনি ইউনিয়ন ব্লক সুপারভাইজারকে বলেন, তালিকাগুলো ঢেকে রাখতে পারেন না। যে কেউ ছবি তুলতেছে বলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। নান্দাইল উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, এমনটি হওয়ার কথা নয়, সনাক্তকারী ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছেন। অতিরিক্ত ২০ টাকা শ্রমিক মুজুরীর জন্য নেওয়া হয়েছে। নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুন কৃষ্ণ পাল বলেন, আমি বিষয়টি মাত্র শোনলাম, এ বিষয়ে আমি কৃষি অফিসারকে জিজ্ঞাস করছি।
ছবি-সংযুক্ত
Devoloped By WOOHOSTBD