নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার (সোনালী ব্যাংকের পেছনে)দক্ষিণ দুলাল পাড়াএলাকায় চিহ্নিত একটি ভূমিদস্যু চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি ওই স্থানে আনিসুর রহমানের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দখলের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
সম্প্রতি চক্রটি আরও বেপরোয়া হয়ে আদালতের আদেশ অমান্য করে জমি দখল করে মাটি খনন করার পর স্থাপনা নির্মাণের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, ভূমিদস্যু চক্রটির অপতৎপরতা থামাতে জমি মালিকরা ১৪৪ ধারা জারি করেও থামাতে পারছেন না তাদের। এই চক্রের মূলোৎপাটন করতে অভিযানের পর অভিযান চালিয়েও তেমন কোন পরিবর্তন আনতে পারছে না পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন।
মামলার নথি ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মহাদেবপুর উপজেলা সদরে (দক্ষিণ দুলালপাড়ার) বাসিন্দা মৃতঃ জুলকারনাইন গংদের ওয়ারিশ ১নং সাক্ষী মোঃ সিরাজুল হক ও বাদির স্ত্রী মোছাঃ নাজমা ইয়াসমিন এর মৌরশ জুলকারনাইন নামে আট আনা অংশে সি,এস। এস,এ। আর,এস রেকর্ড পরিশুদ্ধ ভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত আছে। যাহা ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত হয়ে, ৯৭০/১৮ নং দলিল মুলে বাদি (মোঃ আনিছুর রহমান) বরাবর হস্তান্তর করেন। উক্ত আনিছুর ভোগ দখলে থাকা ৬.৫০ শতক জমি অবৈধ দখলের জন্য পাঁয়তারা করে আসছিল বাগধানা গ্রামের মৃত মশর উদ্দিনের পুত্র মোঃ আশেক এলাহী,
মহাদেবপুর মহিলা কলেজ এলাকার মৃতঃ রজব আলীর পুত্র মোঃ নওশাদ আলী ব্যাপারী,খোশালপুর গ্রামের মৃতঃ আঃ কাদেরের ছেলে মোঃ জহিরুল ইসলাম,
সাফা পুর মালু পাড়া গ্রামের মৃতঃ কফিল উদ্দিন দেওয়ানের ছেলে মোঃ মোবারক হোসেন,
দক্ষিণ দুলাল পাড়া গ্রামের মৃতঃ মতিউর রহমানের স্ত্রী – শেফালী বিবি ও ২য় স্ত্রী- জহুরা বিবি,
লিচু বাগান এলাকার মৃতঃ মতিউর রহমানের ছেলে মোঃ জহুরুল ও কন্যা মোছাঃ পপি খাতুন,
এনায়েত পুর ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের মৃতঃ জছির সরদ্দারের ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেনে,
যোথহরি গ্রামের মৃতঃ আবু তালেবের ছেলে মোঃ জুয়েল,
উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের চক-কামাল গ্রামের বাহার আলী (বামন) এর ছেলে মোঃ আঃ হামিদসহ একটি চক্র।
এ অবস্থায় তারা জমিটি দখলের অপ-তৎপরতা চালালে বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশংকা করে ভুক্তভোগীরা বিগত সময় বেশ কয়েকবার মহাদেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
পুলিশের নিষেধ উপেক্ষা করে আশেক এলাহী, মোবারক হোসেন ও শেফালী বিবি সহ চক্রটি মোঃ আনিছুর রহমানের এ ভূমি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।
এতে নিরুপায় হয়ে জমির মালিক আনিছুর রহমান নওগাঁ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালতে এমআর মামলা করেন। যার মামলা নং ২১৫মিস/২০২৪( মহাদেবপুর)
এবং তার কিছু দিন পারে সহকারী জজআদালত মহাদেবপুর,নওগাঁ মামলা নং- ৯৩/২০২৪ অঃ প্রঃ (চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা) দায়ের করে।
এরই প্রেক্ষিতে জমি দখলকারী মোঃ মোবারক হোসেন ও শেফালী বেওয়া সহ চক্রটিকে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব ও জমি দখলের কাগজপত্রসহ আদালতে সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে নালিশি জমিতে শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ হতে পারে সেজন্য মহাদেবপুর থানার ওসিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং স্থাপনা নির্মাণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।
এমন নির্দেশনার পরও মোবারক হোসেন ও শেফালী বেওয়ার চক্রটি ওই জমিতে গিয়ে মাটি খনন করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আদালতের এমন নির্দেশনা উপেক্ষা করে গত মাস খানেক ধরে প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসী মতাদর্শে বিশ্বাসী মোবারক হোসেন ও শেফালী বেওয়া
ওই জমিতে গত ০১/০৩/২০২৪ ইং তারিখে ভোর ৪ ঘটিকার সময় টিনের বেড়া দিয়ে একটা ঘর নির্মাণে লিপ্ত হন। যা চলমান রয়েছে। ফলে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরও এমন ঘটনায় চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে পড়েছেন জমির মালিক আনিছুর রহমান গংরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বিবদমান জমিতে আদালত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিলেও তা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ যাচ্ছেন চক্রটি। জমির মালিকানা বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত উভয়পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশা দিলেও চক্রটি তা মানছেন না।
আদালতের আদেশ না মানার বিষয়টি মহাদেবপুর থানা পুলিশকে জানানোর পর ঘটনাস্থাল পরিদর্শনে আসে পুলিশ। তবে পুলিশ আসার খরবে ভূমিদস্যু চক্রটি কিছুক্ষণের জন্য পালিয়ে গেলেও পুনরায় চালিয়ে যান তাদের দখল কার্যক্রম।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, জমি দখলে নিতে অস্ত্রধারী দাগী আসামীদের দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে মহড়া চালিয়ে জমিতে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করছেন ভূমিদস্যুরা। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আশেক এলাহী, মোবারক হোসেন ও শেফালী বেওয়া। আদালতের আদেশ ও নির্দেশনার অনুবলে মহাদেবপুর থানা পুলিশ সংশ্লিষ্টদের বিরোধপূর্ণ জায়গায় কোনও প্রকার কার্যক্রম চালাতে নিষেধ করলেও ভূমিদস্যু চক্রটি এ নিষেধ না শোনে একের পর এক দখল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে নিজের জমি দখল নিতে ভীত সন্ত্রস্ত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছি আমরা।এ অবস্থায় অসহায় ভূমি মালিকরা প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মান্যগণ্য
ব্যক্তিবর্গসহ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। আশঙ্কা করছেন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,
আশেক এলাহী, মোবারক হোসেন ও শেফালী বেওয়ার চক্র জমিটি দখলের পর মাটি খননের কাজ শেষ হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে ইট, বালিসহ নির্মাণ সামগ্রী মজুদ করেছে। এরই মধ্যে জমি মালিকরা মহাদেবপুর থানা পুলিশকে অবগত করার পর পুলিশও আসে বেশ কয়েকবার। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। পুলিশ আসার খবর পেয়ে কিছুক্ষণ দখল কার্যক্রম বন্ধ রেখে পালিয়ে যায়। পুনরায় ফিরে আবার শুরু করে দখল কার্যক্রম।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, আদালতে বিচারাধীন এ বিষয়টি মহাদেবপুর থানা পুলিশ ও উপজেলা ভূমি অফিস অবগত আছেন। তারা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিকার চেয়েও যথাযথ সহযোগিতা পাচ্ছেন না। তাদের অভিযোগ, এ অবস্থায় দখলবাজদের বাঁধা দিতে গেলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। এ নিয়ে আনিছুরগং দের পরিবারগুলো বেশ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছে উল্লেখ করে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, রহস্যজনক
Devoloped By WOOHOSTBD