• বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
দৈনিক হালচাল পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাইফুল ইসলাম মধ্যনগরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই ব্যাবসায়ীকে জরিমানা ফ্রান্সে নানা আয়োজনে উদ্বোধন হলো বাংলা ম্যারেজ ব্যারো তাহিরপুরে নানা আয়োজনে প্রতিবন্ধী দিবস পালিত রাজনগরে মোটরসাইকেল পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ফাংশনের চরমমান অন্বেষণ: তত্ত্ব এবং প্রয়োগ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নিকট এনজিও সংস্থা আশার উদ্যোগে ৪ শতাধিক শীতবস্ত্র হস্তান্তর তাহিরপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরে অভিযান পরিচালনা করে ২টি নৌকাসহ নিষিদ্ধ কোনাজাল আটক করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থল থেকে ৬ জন ব্যক্তিকে আটক চট্টগ্রামে  প্রতিবেশ সুরক্ষা, জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক প্রকল্প বাদ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের প্রসারে ফোরাম অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট গঠিত” দৌলতপুর সমিতি কুষ্টিয়ার সভা অনুষ্ঠিত 

তাহিরপুরের যাদুকাটায় পাড় কাটা বন্ধ হলেও ড্রেজারের তাণ্ডব চলছে

Muntu Rahman / ১০৫ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৪

মোঃ আমির হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:

৫০০ একর জায়গা ইজারা নিয়ে যাদুকাটা নদীর প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

গ্রামবাসীর প্রতিবাদের মুখে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্ত নদী যাদুকাটার পাড় কাটা বন্ধ থাকলেও বালু উত্তোলনে পরিবেশবিনাশী ড্রেজার ও সেইভ মেশিনের ব্যবহার থেমে নেই। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নদী, পরিবেশ ও তীরবর্তী মানুষের জীবন। ‘যাদুকাটা-১’ ও ‘যাদুকাটা-২’ বালুমহাল হিসেবে প্রায় ৫০০ একর জায়গা জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর বাইরে গিয়ে নদীর মিয়ারচর থেকে লাউড়েরগড় পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকা থেকে বালু ও পাথর তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। তারা বলছেন, সনাতন পদ্ধতিতে হাত, বালতি, বেলচা দিয়ে বালু উত্তোলনের কথা থাকলেও ব্যবহার হচ্ছে ড্রেজার এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত সেইভ মেশিন। এসব দিয়ে নদী তীরবর্তী এলাকায় গভীর গর্ত করে রাখা হচ্ছে। বর্ষায় মেঘালয় পাহাড়ে ভারি বৃষ্টি হলেই এখনকার গ্রাম, ফসলি জমি ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসহ রাস্তাঘাট হুমকির মুখে পড়বে। এ বছর ‘যাদুকাটা-১’ বালুমহাল ২৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় রতন মিয়ার মালিকানাধীন সোহাগ এন্টারপ্রাইজ এবং ‘যাদুকাটা-২’ বালুমহাল ৪২ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকায় খন্দকার মঞ্জুরের প্রতিষ্ঠান আরাফ ট্রেড করপোরেশন লিমিটেড ইজারা নিয়েছে। মোট ৬৮ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় এ দুটি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। তবে তারা দুইজন একসঙ্গে নদীর ইজারা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। অথচ ২০০৯ সালে পরিবেশের ক্ষতির কথা চিন্তা করে সরকার পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। কারণ ফাজিলপুরের যে জায়গা থেকে বোল্ডার, ভূতু পাথর ও নুড়ি উত্তোলন করা হত, ক্রমান্বয়ে সেই জায়গাটিই বিলীন হয়ে যায়। জেলা প্রশাসন পাথর উত্তোলনের জন্য কোনো জায়গা ইজারা না নিলেও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন ১৭৭ একর জায়গা থেকে অবাধে তিন ধরনের পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, “যে হারে নদীতে ড্রেজার ও সেইভ মেশিন দিয়ে তাণ্ডব চালানো হচ্ছে, এতে নদী তীরবর্তী গ্রাম-হাওর, পরিবেশ, প্রতিবেশ, জনজীবন ও জনবসতি বিপন্ন হবে।” সিলেট বিভাগের সাতটি বালুমহলের ছয়টির ইজারা বন্ধ থাকলেও শুধু যাদুকাটার ইজারা চালু রাখা ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। এই জনপ্রতিনিধি বলেন, “একটি শ্রেণি সুবিধা নিতে এটি চালু রেখেছে বলে আমার মনে হয়। এরই মধ্যে নদী তীরবর্তী অনেক গ্রাম বিলীন হচ্ছে। অবৈধ যন্ত্রে বালু-পাথর উত্তোলনের কারণে সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনকারী সাধারণ শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।” সরজমিনে যা দেখা গেল গত সপ্তাহে যাদুকাটা নদীর পূর্বপাড় লাউড়ের গড় বাজারের পাশে গিয়ে দেখা গেছে, চারটি ড্রেজার মেশিন চালিয়ে পাথর তোলা হচ্ছে। ড্রেজার চালিয়ে নদী তীরবর্তী এলাকায় বড় গর্ত করা হয়েছে। আর নদীর মধ্যখানে চলছে শত শত সেইভ মেশিন চালিয়ে পাথর উত্তোলন কাজ। এ সময় কথা হয় নদীতে কাজ করা নারী শ্রমিক তারামন বিবি, জয়তুন বেগমের সঙ্গে। তারা জানান, আগে নদীর বালুতে গর্ত করে ‘বাংলা কয়লা’ সংগ্রহ করতেন। কিন্তু ড্রেজার নামানোর পর থেকে আর কয়লা মিলছে না। কারণ ড্রেজার দিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি করে পাথর তোলা হয়; এসব গর্তে পানি জমে থাকে। তাই এখন বালু থাকা অংশে ছোট-ছোট গর্ত করে বালু চালুনি দিয়ে নিজেদের জন্য খড়ি (লাকড়ি) তুলছেন। এগুলো বর্ষাকালে স্রোতে ভেসে এসে জমা হয়। কয়লা বিক্রি করে টাকা পাওয়া যেত, এখন নিজেদের জন্য লাকড়ি তুলছেন। একটু দূরে কাজ করা বালু শ্রমিক আকবর আলী বলেন, সেইভ মেশিন দিয়ে গর্ত করে পাথর তোলার কারণে আগের মত ভালো বালু মিলছে না। তারা যারা সারা বছর বেলচা ও হাত দিয়ে বালু তোলেন, তাদের রুজি আগের মত নেই। আর সেইভ মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনে খরচ বেশি। প্রতি সেইভ মেশিন থেকে সারাদিনে এক হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়; ইজারাদারা প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ করবে’ বলে এ টাকা তোলে। তারপর নৌকার তেল খরচের টাকা দরকার, সঙ্গে কয়েকজন মানুষও লাগে। আকবর আলী বলছিলেন, “ইতা (এসব) হইচ্ছে (হচ্ছে) ব্যবসায়ীদের কারবার। আমরা শ্রমিক মানুষ এত খরছ কই থাকি যোগার করুম। যার টাকা আছে তার কোনো কষ্ট করতে হয় না। বইয়া তাকি ইনকাম ওয়।” অপর শ্রমিক আলতা মিয়াও জানালেন, ড্রেজার আসার পর সনাতন শ্রমিকরা বিপদের মুখে পড়েছেন। নদীর পশ্চিমপাড়ে শিমুল বাগান এলাকায় এসে দেখা যায়, তীরে বসানো আছে তিনটি ড্রেজার মেশিন; সেখানেও করা হয়েছে বড় গর্ত। এ তিনটি ড্রেজার মেশিনের মধ্যে একটিতে ইঞ্জিনসহ নৌকা রয়েছে, আর বাকি দুটিতে ইঞ্জিন দেখা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, যখন ড্রেজার চালানো হয়, তখন ইঞ্জিন এনে জুড়ে দেওয়া হয়। কাটা হচ্ছে যাদুকাটার পাড়, গ্রামগুলো হুমকিতে


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Devoloped By WOOHOSTBD