• শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
তাহিরপুর থানা পুলিশের অভিযানে বালু ভর্তি ৪ টি নৌকাসহ গ্রেফতার-১ ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড়ে জামায়াতের বিশাল জনসভা ভেড়ামারায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান! অর্থদন্ড ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক নির্দেশনায় রাতের অন্ধকারে নির্মাণ কৃত অবৈধ স্হাপনা উচ্ছেদ দৌলতপুরে আধিপত্য বিস্তারে নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগ বিএনপি নেতা, মন্টি সরকারের বিরুদ্ধে। ভেড়ামারায় ইউএনওর বদলি আদেশ প্রত্যাহার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মত বিনিময় সভা সংষ্কার এর নামে অরাজকতা সৃষ্টি কারীদের কে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী — ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা গরিব দুঃখী ও মেহনতী মানুষের ভালোবাসার আরেক নাম ডক্টর: কামরুল ইসলাম মনা আজ বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস — ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে ত্রাণ আনতে যাওয়া মিলনের স্ত্রী-সন্তানসহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ১৪ জনের

Muntu Rahman / ৫৫ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

রুহুল আমীন খন্দকার, বিশেষ প্রতিনিধি ::

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের ছত্রকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার ছেলে রাকিবুল ইসলাম মিলন (৪০)। তিনি চাকরি করতেন ঢাকায়, সচিবালয়ে লিফটম্যান হিসেবে। চাকরির সুবাদে পরিচিতদের মাধ্যমে সম্প্রতি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পরিবারের জন্য তদবির করে ত্রাণ হিসেবে কয়েক বান্ডিল ঢেউটিন সহায়তার বরাদ্দ আনেন।

মঙ্গলবার ( ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ইং) সকালে একটি পিকআপে করে নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আশপাশের গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে সেই টিন আনতে যাচ্ছিলেন ফরিদপুরের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে। কিন্তু পথে বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মিলন, তার স্ত্রী সুমি বেগম (৩৩) ও দুই সন্তান আবু রায়হান (৬), আবু সিনান রুহান (৫)-সহ ১৪ জন নিহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিলনের মা খুড়িয়া বেগম। দুর্ঘটনায় মর্জিনা বেগম (৭০) নামে মিলনের এক নানী শাশুড়িরও মৃত্যু হয়েছে। মর্জিনা বেগম একই গ্রামের ওহাব মোল্লার স্ত্রী। বোয়ালমারীর ছত্রকান্দা গ্রামটি আলফাডাঙ্গা উপজেলার সীমান্তঘেঁষা। তাদের ডাকঘর এই আলফাডাঙ্গাতেই।

বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং নিহত মিলন মোল্যার চাচাতো ভাই রুহুল আমীন ঢাকা গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ফরিদপুর ডিসি অফিসের ত্রাণ শাখা থেকে ত্রাণের টিন আনার জন্য মঙ্গলবার সকালে পিকআপে করে স্বপরিবারে মিলন মোল্যা ফরিদপুর যাচ্ছিলেন। পথে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে সরকারি ত্রাণের টিন দেওয়ার কথা ছিল আজ, সে কারণেই আলফাডাঙ্গা এবং বোয়ালমারী থেকে তালিকাভুক্ত ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারের সদস্যরা পিকআপযোগে ফরিদপুর আসছিলেন।

মিলনের মামাত ভাই নুরুজ্জামান খসরু গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ঢাকা থেকে কয়েকটি দরিদ্র পরিবারের জন্য ত্রাণের টিনের ব্যবস্থা করে সোমবার বিকালে বাড়িতে আসে মিলন। সকালে ফরিদপুর রওনা হন। তার আগে গতরাতে সর্বশেষ কথা হয়েছিল তার সঙ্গে। বলেছিল যে ত্রাণের টিনগুলো বুঝিয়ে দিয়ে ওই পথেই চলে যাবেন ঢাকা। কিন্তু এটিই যে তার শেষ যাওয়া সেটি কেউ জানতো না।

খসরু আরও জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে রাকিবুল ইসলাম মিলন মেজো ছিলেন। তার বড় ভাই ফরিদুল ইসলাম স্কুল শিক্ষক, আর ছোট ভাই হাবিবুর রহমান মাস্টার্স পাস করে আলফাডাঙ্গা সদরে মোবাইল টেলকমের দোকান দিয়েছেন। আট বছর আগে আলফাডাঙ্গার বানা ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের রোকায়েশ মোল্লার মেয়ে সুমির সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

এদিকে হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনার খবরে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশ ঘরে নিয়ে আসা হলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

বোয়ালমারী শেখর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, একই পরিবারের পাঁচ ব্যক্তির মারা যাওয়ার খবর পাওয়ার পর পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। ইতোপূর্বে আমাদের এই ইউনিয়নে একই পরিবারের এতগুলো মানুষের কোনো দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে কানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বেলায়েত ফকির বলেন, যাত্রীবাহী বাস এবং পিকআপ দুটি অতিরিক্ত গতিতে ছিল। পরস্পর বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ি দুটি নিজেদের লেন থেকে বাইরে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এমন অপমৃত্যু আমরা কেউ প্রত্যাশা করি না।

নিহত রাকিবুলের ফুফাত ভাই মকিবুল ইসলাম পিকআপে যাত্রী চলাচলের ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরে ঢাকা টাইমসকে বলেন, এভাবে সবার সামনে পিকআপে ১৫-২০ জন মানুষ যাত্রা করল, অথচ কেউ কিছু বলল না! সড়কপথে এভাবে যাত্রী চলাচল নিষিদ্ধ হলেও কেউ সে আইন মানে না। আবার যাদের দেখভাল করার কথা তারাও কিছু বলে না।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম অবশ্য এ ব্যাপারে যাত্রীদেরই সচেতন হওয়ার ওপর জোর দেন বেশি। তিনি বলেন, যেই পিকআপটিতে করে তারা যাচ্ছিলেন হয়তো তার চালকের কোনো লাইসেন্সই ছিল না। এ জন্য যখন কেউ কোনো পরিবহনে ওঠবেন, নিজের দায়িত্বশীলতা থেকেই জেনে নেবেন গাড়িটি উপযোগী কি না, কিংবা চালকের বৈধতা আছে কি না।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের তেঁতুলতলা এ্যাবলুম হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে ১১ জন নিহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়, সেখানে মৃত্যু হয়েছে আরও দুজনের। আর ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান মোঃ ইকবাল হোসেন। তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কুমরাইল গ্রামের বাসিন্দা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Devoloped By WOOHOSTBD