— ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা
আপনি কি আপনার সৌন্দর্য ধরে রাখতে চান? মেদ কমাতে চান? স্লিম হতে চান? নিরোগ হতে চান? এক সপ্তাহে ৩/৪ কিলো ওজন কমাতে চান? আপনি কি Health, Fitness, & Beauty চান? তাহলে আজই চলে আসুন ডাঃ মনা ইয়োগা ওয়ার্ল্ড এ।
নিয়মিত প্রাণায়াম যোগ, লাইফ স্টাইল পরিবর্তন, খাদ্যভাস পরিবর্তন করে সুস্থ ও নীরোগ থাকুন!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ওজন বাড়ার আসল কারণ হয় ভুল খাদ্যাভ্যাস এবং সঠিক সময়ে ব্যায়াম না করা।ডাঃ মনা ইয়োগা ওয়ার্ল্ড এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান প্রশিক্ষক ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা বলেন, সকালে উঠে পাঁচটি কাজ এবং কিছু খাদ্যভাস পরিবর্তন করলে আপনি খুব সহজেই ওজন কমাতে পারবেন এবং আপনার কাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণ হয়ে উঠবে। যেমন-
১.সকালে উঠে উষ্ণ গরম জল খান- সকালে উঠে প্রথম কাজ আপনাকে করতে হবে যে হালকা উষ্ণ জল খেতে হবে। সকাল সকাল উষ্ণ জল খেলে পাচন ক্রিয়া অত্যন্ত ভালো থাকে। উষ্ণ জল মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়। যাতে শরীরের এক্সট্রা ফ্যাট কম হতে সাহায্য করে এবং আপনি ফিট থাকবেন। সঙ্গে আপনি মধু ও লেবুও মিশিয়ে খেতে পারেন।
২.সূর্যোদয়ের সময় মর্নিং ওয়াক ও যোগ ব্যায়াম – আপনি যদি মর্নিংওয়াকে অভ্যস্ত হন তাহলে সেটি মনে রাখবেন যে সূর্যোদয়ের পরে নয়, ভোরবেলায় আপনাকে কমপক্ষে ২০ মিনিট হাঁটতে হবে এবং প্রাণায়াম যোগ করুন। এতে ওয়েট লস খুব তাড়াতাড়ি হয়। একাধিক স্টাডিজে জানা গিয়েছে যে সমস্ত লোকেরা ভিটামিন ডি কম থাকে তাদের ওজন খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে।
৩. প্রোটিনযুক্ত ব্রেকফাস্ট – দিনের শুরুতে ভালো ব্রেকফাস্ট করতে হবে। ব্রেকফাস্ট আপনাকে পুরো দিনের ডায়েট সেট করে দেবে। আপনার ব্রেকফাস্টে বিন্স, সয়া, স্প্রাউট, কার্টেজ ইয়োগার্ট, ডিম শামিল রাখতে হবে। সেই সঙ্গে খুব সামান্য পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট খেতে পারেন।
৪. প্রত্যেকদিন এর লক্ষ্য স্থির করুন- যখন আপনি প্রত্যেকদিন লক্ষ্য নিয়ে গম্ভীর এবং সচেতন থাকবেন না, তখন আপনি লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন না। আপনাকে কী করতে হবে? কতটা খাচ্ছেন, কতটা ঘুমাচ্ছেন, কতটা এক্সারসাইজ করছেন এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে এবং সময় মেপে তা করতে হবে। এর সমস্ত প্রভাব আপনার শরীরের উপর পড়বে।
৫. যোগা, প্রাণায়াম এবং মেডিটেশন – প্রত্যেকদিন যোগাকরলে শরীর এবং মস্তিষ্ক অবসাদ মুক্ত হয়, শরীর ভালো থাকে। ব্যথা বেদনা কম থাকে। চনমনে থাকে। যাতে আপনি সারাদিন অনেক বেশি কাজ করতে পারবেন। যাতে আপনার মেটাবলিজম ঠিক থাকবে। সূর্য নমস্কার, কপালভাতি, অনুলোম-বিলোম এর মত যোগাসন এবং প্রাণায়ামের বিষয়ে খোঁজ নিন এবং তা করতে পারলে ওজন দ্রুত কমতে থাকে।
বিজ্ঞানসম্মত সহজ উপায়ে খাদ্যভাস পরিবর্তন করুন –
* কার্বোহাইড্রেডযুক্ত খাবার পরিহার –
বেশি ক্যালোরির কার্বোহাইড্রেডযুক্ত খাবারের বদলে শস্য থেকে উৎপাদিত খাবার খাওয়া হচ্ছে ওজন কমানোর অন্যতম সহজ উপায়। অর্থাৎ সাদা আটা থেকে উৎপাদিত খাবার খাওয়া কমাতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।
এটি আপনার ক্ষুধার মাত্রা কমাবে। কার্ব-ডায়েট করার সময় দেহশক্তির জন্য শর্করার বদলে আপনার শরীরের সঞ্চিত ফ্যাট ব্যবহার করবে।
লাল আটা থেকে উৎপাদিত খাবার আপনার শরীরে আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণের পরিমাণ বাড়ায়। সেই সঙ্গে খাবার ধীরে ধীরে হজমে সহায়তা করে। ফলে আপনার ক্ষুধা কম লাগবে। শস্যদানা থেকে উৎপাদিত খাবার খেলে ফ্যাটযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমবে।
* সালাদ, কুসুম গরম জল, শাকসবজি ও ফলমূল বেশী খান-
ওজন কমানোর বড় দাওয়াই হচ্ছে সবুজ শাকসবজি। বেশি করে শাকসবজি আপনাকে স্বাস্থ্যকর থাকতে সাহায্য করে। সবুজ শাকসবজি পুষ্টিতে ভরপুর এবং কম ক্যালোরিযুক্ত হয়।
কম ক্যালোরি, পুষ্টিগুণযুক্ত সবুজ শাকসবজির মাঝে অন্যতম হচ্ছে ব্রোকলি, ফুলকপি, শাক, টমেটো, কেল, ব্রাসেলস স্প্রাউটস, বাঁধাকপি, সুইস চারড, লেটুস ও শসা।
এ ছাড়া সব ফ্যাট খারাপ হয় না। আপনার দেহের মসৃণভাবে কাজ করতে চর্বিযুক্ত খাবারেরও প্রয়োজন। তাই আপনার ডায়েটে স্বাস্থ্যকর চর্বি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অলিভ অয়েল এবং অ্যাভোকাডো অয়েল বেছে নিতে পারেন।
আবার নারিকেল তেল ও মাখনের মতো চর্বিগুলোতে পর্যাপ্ত ফ্যাট থাকে। তাই এগুলো পরিমিত ব্যবহার করা উচিত।
* প্রাণায়াম যোগ –
স্বাস্থ্যকর খাওয়ার পাশাপাশি প্রাণায়াম যোগ আপনার ওজন দ্রুত হ্রাস করতে সহায়তা করে এবং সুস্থ ও নীরোগ রাখতে সহায়তা করে।
নিয়মিত প্রাণায়াম যোগ করলে আপনার বিপাক ক্রিয়া বজায় রাখতে সহায়তা করবে, ওজন কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন রকম শরীরচর্চা আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করবে।
বাড়তি ওজন কমানোর ৫টি টিপস-
১. ভাত/রুটির পরিমাণ একেবারে কমিয়ে আনুন
২. সন্ধ্যা ৭/৮ টার মধ্যে রাতের খাবার খেতে হবে
৩. রাতে ফকিরের মত সামান্য খান
৪. পর্যাপ্ত পরিমাণে সব্জি, সালাদ,ফলমূল, বীজ খান
৫. প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট জোরে জোরে হাঁটুন এবং নিয়মিত প্রাণায়াম যোগ করুন।
ওজন কমাতে ৪ টা বর্জনীয় –
১. রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট বর্জন করুন ( চিনি, সাদা চাল, সাদা ময়দা ইত্যাদি)
২. মাংস, পোলাও, বিরিয়ানি, কোমল পানীয়, ফাস্ট ফুড বর্জন করুন
৩. রাতে মাছ মাংস দই শশা গুরুপাক খাবেননা
৪. মাঝে মধ্যে রোজা রাখুন।
* অতিরিক্ত ওজনের ক্ষতিকর প্রভাব –
অতিরিক্ত ওজনের ফলে করোনারি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্টোক, কোলেস্টেরল, অস্টিওআর্থারাইটিস, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি রোগ হতে পারে।
** এছাড়াও প্রতিদিন সকালে যে পাঁচটি খাবার খেলে আপনার শরীর নীরোগ থাকবে। যেমন-
১) ঘুম থেকে উঠার পর 1 লিটার কুসুম গরম পানি যা আপনার দেহের টক্সিন দূর করবে।
২) 1 ইঞ্চি কাঁচা আদা চিবিয়ে খাবেন যা আপনার অতিরিক্ত ব্লাড সুগার, লিভার গোলযোগ দূর করবে।
৩) কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খাবেন তাতে উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৪) চারটে করে কাঠবাদাম রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাবেন যা ব্রেনের কাজকর্মকে সফলভাবে পরিচালিত করবে।
৫) একটি সিদ্ধ ডিম সকাল বেলা খাবেন ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করবে শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
আসুন আমরা আজ থেকে এগুলো নিজে মেনে চলার চেষ্টা করি এবং অন্য কে মেনে চলতে উৎসাহিত করি।
শরীর ফিট তো আপনি হিট! যোগ করুন চির সবুজ থাকুন। ঔষধ কে না বলুন! আপনাদেরকে নীরোগ রাখতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা…
যোগ এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে বিস্তারিত জানতে — ০১৭১২২৭৬৭৫৩
Devoloped By WOOHOSTBD