আলোচিত ইসলামিক বক্তা মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে কেন্দ্র করে ওয়াজ মাহফিলে আসা একদল বিক্ষুব্ধ জনতা বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অন্তত ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পুলিশের মুহুর্মুহু ফাঁকা গুলিতে আশপাশের সাধারন মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
গতকাল (১৯ ফেব্রুয়ারি) সোমবার রাত সাড়ে বারোটার দিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে বাদাঘাট এলাকা থেকে জড়িত সন্দেহে তিনজনসহ এ পর্যন্ত ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। অন্যদিকে ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে ২ দিনব্যাপী তাফসীরুল কুরআন মাহফিলের আয়োজক কমিটি হিলফুল ফুজুলের সংঘটনের অনেকেই রয়েছেন আত্মগোপনে।
জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে হিলফুল ফুজুল পরিষদ বাদাঘাটের ব্যানারে (১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার ও ২০ মঙ্গলবার) দুইদিন ব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের আয়োজন করে। এতে সোমবার রাতে আলোচিত ইসলামিক বক্তা মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে মাহফিলস্থলে নিয়ে আসার চেষ্টা করে আয়োজকরা। কিন্তু তাতে প্রশাসনের অনুমতি মেলেনি। যদিও রাত বারোটার দিকে মাওলানা মাদানি মাহফিলস্থলের বাইরে বাদাঘাট বাজারে অবস্থান করছিল। পরে এ নিয়ে আয়োজকদের সঙ্গে প্রশাসনের অনেক দেন-দরবার চলে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টিতে সমাধান না আসায় আয়োজক কমিটি তাদের মাহফিল এদিনের মতো সমাপ্ত ঘোষণা করে। এবং মাহফিলে আসা জনতাকে বাড়িতে চলে যাওয়ার অনুরোধ করে।
এদিকে মাহফিল সমাপ্ত ঘোষণা করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আগত লোকজন। পরে বিক্ষুদ্ধ জনতা নানা স্লোগান ধরে বাজারের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ জনতার একটি অংশ বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে ও ভাংচুর চালায়। ভাংচুরকারীরা তদন্ত কেন্দ্রের বাঁশের বেড়া ও সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এসময় ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এসময় কোন হতাহতের ঘটনার কোন খবর এ নিউজ লিখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
আয়োজক কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানিকে মাহফিলস্থলে না আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়। আমরাও প্রশাসনের কথা মেনে মাওলানা মাদানিকে মাহফিলস্থলে নিয়ে যায়নি। এবং মাহফিল সমাপ্ত ঘোষণা করি। পরে বিক্ষুদ্ধ জনতার একটি অংশ স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে ভাংচুর চালায়।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের কাজে বাঁধা দেয়ায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তাছাড়া রাতেই তিনজনসহ এ পর্যন্ত ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম-পরিচয় এখনই বলা যাচ্ছে না।
Devoloped By WOOHOSTBD