— ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা
দীর্ঘদিন পর দৈনিক হালচাল নিউজ পত্রিকা টি চালু করতে পারায় প্রথমেই আল্লাহর কাছে লাখোকোটি শুকরিয়া আদায় করছি। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যারা সার্বিকভাবে সহায়তা করেছেন তাদের কে। ঘুম থেকে উঠলেই রোজ মাইকিং শুনতে পায় কারো না কারোর মৃত্যু সংবাদ।আমারও বয়স হয়েছে, শরীরটাও আগের মত নেই, ভয় হয়,,,। হতে পারে এটাই আমার জীবনের শেষ অনুশোচনা, শেষ নামাজ, শেষ সময়,,,,,। হটাৎ করেই মৃত্যুর কথা মনে হওয়ায় আত্মসমালোচনার কথা মনে হলো। আসুন আমরা সকলেই আত্মসমালোচনা নিজে করি এবং অপরকে করতে উৎসাহিত করি।
জীবনে চলার পথে আমরা জানা অজানা, ইচ্ছায়- অনিচ্ছায় প্রতিনিয়ত কতই না ভুল করে চলেছি। দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী তাই দুনিয়ার সুখের পাশাপাশি পরকালের কথা আমাদের সকলের মাথায় রেখে পরকালের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করা বুদ্ধিমানের কাজ। অন্যথায় মৃত্যুর পর চরম কষ্ট ভোগ করতে হবে। তাই আসুন আমরা দুনিয়াবি হাজারো কাজের পাশাপাশি আমরা নিয়মিত আত্মসমালোচনা করি এবং পরকালের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করি।
আত্মসমালোচনা করা আয়না স্বরুপ। এর মাধ্যমে একজন মানুষ তার দোষ ক্রুটি দূর করে নিজেকে আদর্শ চরিত্রবান রুপে গড়ে তুলতে পারে। এ কারণেই হযরত ওমর (রাঃ) বলতেন, আল্লাহর কাছে হিসাব দেবার আগে তুমি নিজেই নিজের হিসাব করে নাও।
অন্যত্র রাসুল (সাঃ) বলেছেন, বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে তার নফসের হিসাব নেয় এবং মৃত্যুর পরের জীবনের জন্য কাজ করে। আর দূর্বল ঐ ব্যক্তি যে নিজের নফসের কুপ্রকৃতির অনুসরণ করে, আবার আল্লাহর কাছে আশা আকাঙ্খা রাখে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, যে আত্মশুদ্ধি অবলম্বন করেছে সে সফল হয়েছে, আর যে নিজের আত্মা কে কলুষিত করেছে সে ব্যর্থ হয়েছে।
কখন কার মৃত্যু হয় বলা তো যায়না তাই আসুন আমরা জীবনের শেষ তওবা মনে করে আত্মসমালোচনা করে ক্ষমা প্রার্থনা করি।
মানুষ মাত্রই মরনশীল। কবরের, হাসরের, পরকালের কথা ভেবে যে পথে চললে আল্লাহ এবং রাসুল (সাঃ) রাজি খুশি হন সে ভাবে জীবন যাপন করা।
যারই ফলশ্রুতিতে আমাদের সকলের উচিৎ নিয়মিত আত্মসমালোচনা করে মনে প্রানে অন্তর দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা । আমার মতে আত্মসমালোচনার উৎকৃষ্ট সময় প্রত্যেক দিন এশার নামাজের শেষে বা রাত্রে শোবায় আগে সারাদিনের কাজ কর্ম অন্তর দিয়ে স্মরণ করা। যেমন – নামাজ পড়েছি কিনা? মিথ্যা বলেছি কিনা? কারো কোন ক্ষতি করেছি কিনা? গীবত করেছি কিনা? সুদ, ঘুষ, ব্যভিচার, মদ পান ইত্যাদি কোন পাপ করেছি কিনা একাগ্রচিত্তে মনে করে আল্লাহর দরবারে তওবা করে অন্তর দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং গুনাহ থেকে হেফাজত চাওয়া। নিয়মিত আত্মসমালোচনা করলে নিজের ভুলগুলো শুধরে নিজেকে সংশোধন করা সহজ হয় এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা যায়।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ৫ টি বিষয়ের পূর্বে ৫ টি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব প্রদান কর।
১. বার্ধক্য আসার আগে যৌবনের
২. রোগাক্রান্ত হওয়ার আগে স্বাস্থ্যের
৩. দারিদ্র্যতা আসার আগে সচ্ছলতার
৪. ব্যস্ত হয়ে যাওয়ার আগে অবসরের
৫. মৃত্যু আসার আগে জীবনের।
তাই আসুন আমরা উক্ত ৫ টি বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে চলার চেষ্টা করি।
আল্লাহপাক বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তওবা কর,যাতে সফলকাম হতে পারো।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, মানুষ মাত্রই গুনাহগার এবং গুনাহগার দের মধ্যে সেই উত্তম যে তওবা করে।
হে আল্লাহ আমাদের সকলকে ক্ষমা করে দাও। জানা অজানা ইচ্ছায় অনিচ্ছায় যত গুনাহ করেছি সকল গুনাহ থেকে মাফ করে দাও। দুনিয়ার মোহে পড়ে কত কি না করে চলেছি সকল প্রকার লোভ মোহ হিংস্রতা অহংকার জিদ থেকে হেফাজত করো। যে পথে চললে তুমি এবং তোমার হাবীব রাজি খুশী থাকো সেই পথে চলার তৌফিক দান করো। সকল বিপদ আপোদ হতে রক্ষা করো। পরিবার পরিজন বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন সকল কে হেফাজত করো, হেদায়েত দান করো। হতে পারে এটাই আমার জীবনের শেষ তওবা তাই জীবনের শেষ তওবা মনে করেই আমাকেসহ আমাদের সকলকে ক্ষমা করে দাও। রোগ বালাই, অভাব অনটন থেকে মুক্তি দাও,,,,। আমিন।
Devoloped By WOOHOSTBD