‘ ডাঃ মনা বলেন, সরকার, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে হৃদরোগ কে গলা টিপে হত্যা করা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, হৃদয়ের যন্ত্র হোক সর্বজনীন’। আপনার হার্ট কে ভালো রাখতে চাইলে ” ভালোবাসা দিয়ে প্রতিটি হৃদয়ের যত্ন নিন “।
সারা বিশ্বে হৃদরোগের কারণে বছরে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ লোক মারা যায়। বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। হৃদরোগ শুধু বড়দের নয়, শিশু-কিশোরদের মাঝেও দেখা যাচ্ছে।
প্রথমেই বাংলাদেশে হৃদরোগের পরিসংখ্যান সমূহ নিয়ে আলোচনা করা যাক:
হৃদরোগ শুধু ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সমস্যা নয়; এটি একটি জাতীয় স্বাস্থ্য সংকট, যা আমাদের অর্থনীতি, পরিবার এবং সামগ্রিক সমাজব্যবস্থার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। প্রতি বছর বাংলাদেশে ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যায়,
বাংলাদেশে হৃদরোগের পরিসংখ্যান: হৃদরোগের ঝুঁকিতে আছে সমগ্র জনসংখ্যার প্রায় 80 পার্সেন্ট, প্রতিদিন ডাক্তারদের চেম্বার এ যে পরিমাণ রোগী হয় তার তিনজনের একজন হৃদরোগী, শিশুদের মাঝেও এ রোগটি হুহু করে বেড়ে চলছে, 2020 সালের 9 মাসের ডেথ সার্টিফিকেট পর্যালোচনায় দেখা যায় হৃদরোগে মারা গিয়েছে এক লক্ষ আশি হাজার, করোনায় মারা গিয়েছে মাত্র পাঁচ হাজার, করো না নিয়ে যতটা সচেতন, মিডিয়ার বাগাড়ম্বর, হৃদরোগ নিয়ে ততটা নয়, হৃদরোগের ঝুঁকি প্রতিরোধ করা একেবারে মামুলি ব্যাপার, শুধু পদক্ষেপ এর অভাব, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে 2025 সাল নাগাদ হৃদরোগ ভয়াবহ রূপ নিবে, 2030 সালে ক্যান্সার হবে মেজর কিডারে ডিজে জ,ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল জানায় 33% ক্যান্সারের কারণ হলো খাদ্য অভ্যাস। হৃদরোগ এর কারণ ও খাদ্যাভ্যাস এবং সামাজিক পারিবারিক এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা ও এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জার্নাল অব ইউরোপিয়ান ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন পত্রিকার রিপোর্ট হলো পৃথিবীর দশটি নিকৃষ্ট খাদ্য যা জন্তু-জানোয়ারের খায় না মানুষ খায় যেমন বার্গার আইসক্রিম কোমল পানীয় সিন্থেটিক হদ সিনথেটিক মেডিসিন ধূমপান অ্যালকোহল সিন্থেটিক কালার ইত্যাদি। সামাজিক পারিবারিক রাজনৈতিক কারণ গুলি হল সমাজ দ্বারা মানুষ এ হৃদয় ক্ষত বিক্ষত হলে রক্তের স্রোতে ক্যাটেকোলামাইন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় তখন মানুষের হৃদরোগ , ব্রেন স্ট্রোক ইত্যাদি রোগ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পায়। সরকার, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে হৃদরোগ কে গলা টিপে হত্যা করা সম্ভব। এ ব্যাপারে কিছু পুষ্টি খাদ্যের প্রতি নজর দেওয়া দরকার যেমন মাশরুম, সয়াবিন, সজনে ডাঁটা ইত্যাদি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এই পুষ্টি খাদ্য বাজারজাতকরণের জন্য সমাজে বাধা অনেক রকম যেমন বিএসটিআই, পুলিশ প্রশাসন, ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইত্যাদি। এগুলো হলো হাজার বছরের দেশীয় সংস্কৃতির অংশ এগুলোকে বিএসটিআই’র মারপ্যাঁচে বন্দি করলে সমাজে উদ্যোক্তা তৈরি হবে না। আইনি জটিলতার ভয় কেউ ব্যবসা করবে না, তাই প্রয়োজন সরকারি এমন কোনো নীতিমালা যা সাধারন বেকার যুবকরা এ ব্যবসা আসতে পারে। তাই সরকারের উচিৎ বেকারত্ব দূরীকরণে বেকার উদ্যোক্তাদের জন্য আইনি জটিলতার বিষয় টি গুরুত্ব সহকারে দেখার পরামর্শ রইল।
বিশ্ব জুড়ে হৃদরোগ ও হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করতে ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ “খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১” খসড়া প্রণয়ন করেছে। প্রয়োজনীয় ভেটিং শেষে এটি চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
ডাঃ মনা ইয়োগা ওয়ার্ল্ড & ফিজিওথেরাপি সেন্টার এর প্রতিষ্ঠাতা প্রধান প্রশিক্ষক ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা বলেন, ‘খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল হলে তা অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রবিধানমালাটি চূড়ান্ত করবে সরকার।’
প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, ‘তরুণরা ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার বেশি খেয়ে থাকে। খাদ্যদ্রব্য থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল করা না গেলে তরুণ প্রজন্ম মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়বে।’
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মো. রূহুল কুদ্দুস বলেন, ‘খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল করতে না পারলে দেশে ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগ ঝুঁকি বাড়বে, চিকিৎসা খাতে ব্যয় বাড়বে এবং আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।’
ভেড়ামারা অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি দেশ-বিদেশ খ্যাত স্বনামধন্য চিকিৎসক ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা বলেন, ‘হৃদয় দিয়ে হৃদযন্ত্রের যত্ন নিন।’ সরকার, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে হৃদরোগ কে গলা টিপে হত্যা করা সম্ভব। সচেতনতা, খাদ্যভাস পরিবর্তন , প্রাণায়াম যোগ, লাইফ স্টাইল পরিবর্তন করে আমরা হৃদ রোগের সংখ্যা কমাতে পারি। তাই আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের পরিবর্তনে কাজ করি এবং হৃদরোগ কে না বলি।
ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা আরো বলেন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর পদ্ধতি সমূহ মেনে চললে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর পদ্ধতি সমূহ:
১) সকল প্রকার ফাস্টফুড বর্জন।
২) দৈনিক 200 গ্রাম মৌসুমী ফল, 200 গ্রাম সবজি, 100 গ্রাম পাতা বহুল শাক, এক বাটি ডাল নিয়মিত খেতে হবে।
৩) সাধ্যমত 40 মিনিট হাঁটতে হবে, কারণ হাঁটলে কোলেস্টেরল, ট্রাই গ্লিসারাইড, এলডিএল কমে এবং এইচডিএল বাড়ে।
৪) ধীরে ধীরে রান্নার তেল কমিয়ে 0 নিয়ে আসতে হবে।
৫ মেডিটেশনের মাধ্যমে পুরাতন মানসিক যন্ত্রণা ঝেড়ে ফেলতে হবে।
৬) সিগারেট, জর্দা, মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
৭) নিয়মিত প্রাণায়াম যোগ করতে হবে। প্রাণায়াম যোগই হতে পারে হৃদ রোগকে না বলার বড় ঔষধ।
৮) কাউন্সিলিং করা
৯) হৃদপিণ্ড বান্ধব খাবার বাদাম, আখরোট, মাশরুম, সয়াবিন ইত্যাদি খাওয়া উচিত। মাশরুম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বহুলাংশে কমে যায়।
সচেতনতা, খাদ্যভাস পরিবর্তন , প্রাণায়াম যোগ, লাইফ স্টাইল পরিবর্তন করে আমরা হৃদ রোগের সংখ্যা কমাতে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি হৃদ রোগ কে না বলি।
হৃদরোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং চিকিৎসা সেবা নিতে ০১৭১২২৭৬৭৫৩
Devoloped By WOOHOSTBD