• বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
ভেড়ামারায় নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সাথে নিয়ে পরিদর্শন করলেন এমপি কামারুল আরেফিন দৌলতপুরে জমির ভাগ না দিয়ে অন্যের কাছে লিজ দেওয়ার অভিযোগ  দুই বাংলায় যোগ এবং অ্যাকিউপ্রেসার এর জগতে অপর্ণা মিত্র ও ডাঃ মনা’র অবদান অনস্বীকার্য দ্বিতীয় UYSF ইন্ডিয়া ন্যাশনাল ইয়োগা স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ মঞ্চে জ্বলে উঠলো স্বস্তিক অষ্টাঙ্গ একাডেমি নক্ষত্ররা কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এর ৭৭তম জন্মদিন উদযাপন করলো ” জাতীয় নারী সাহিত্য পরিষদ” যুব জমিয়ত বাংলাদেশ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার ৪১ বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন পাবনায় জামায়াতের সেলাই মেশিন বিতরণ নড়াইলে মোটরসাইকেল-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে স্কুলছাত্র নিহত ঈদুল আযহা উপলক্ষে রায়পুরাতে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ…. শিক্ষা কর্মকাণ্ডে প্রশংসিত,রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক মাউসির (ডিডি)ডাঃশরমিন ফেরদৌস চৌধুরী।

তোমারই জয় হোক

Zakir Hossain Mithun / ২৯৬ Time View
Update : রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

তোমারই জয় হোক

— ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা

আজ হ্যাপি ডে। যদি ও এই দিবস কে আমি মানিনা। আল্লাহর দিন সব সমান। এই দিবসকে নিয়ে কত পরিবার নষ্ট হচ্ছে, কত যুবক যুবতী পাপের স্বীকার হচ্ছে। তেমনি আজ বাস্তব এক চিত্র নিজ চোখে দেখলাম।
কথায় বলে, তেল মাথায় ঢালো তেল, শুকনো মাথায় ভাঙো বেল। কথাটা প্রবাদ হলেও চির সত্য। বাবা নামক ব্যক্তিটা সবার জন্য কমবেশি করে থাকে তারপর ও সেই বাবার মাথায় যদি তেল না থাকে তাহলে আপনজন এমনকি ঘরের বৌ বাচ্চা ও সুযোগ পেলে ২ হাত বাঁশ দিতে কমতি করেনা। গতকাল চেম্বারে একটা রুগী এসেছিল। রুগীটা বর্তমানে আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন। কেন হটাৎ করে এমন হলো তার জীবন বৃত্তান্ত শুনে আমিই অবাক হয়ে চেয়ে রইলাম সেই মহান মানুষটার দিকে। এবার আসি মুল ঘটনায়, রুগীটার নাম নিশিত। সে ভালবেসে বিয়ে করেছে মাধবী নামে একটি মেয়েকে। সুখেই চলছিল তাদের জীবন। নিশিত এর একটাই চাওয়া মাধবীকে পৃথিবীর সেরা সম্পদে পরিণত করা। যাতে করে উভয় কালেই তারা একত্রে থাকতে পারে। কোরআন হাদিসের আলোকে জীবন গড়তে সারাক্ষণ মাধবীকে পথ দেখায় নিশিত। কোল আলো করে একটি সুন্দর ফুটফুটে কন্যা সন্তান ও এসেছে তাদের ভালবাসার ফসল হিসেবে। শেক্সপিয়ার যথার্থই বলেছিলেন, অভাব যখন দরজায় এসে দাড়ায়, ভালবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়। নিশিত বেকার বলে পরিবারের সবার কাছে যেমন কথা শুনতে হয় ঠিক তেমনি ইদানীং বৌয়ের থেকেও শুনতে হয়। বৌ টা অনেক ভালো। নিশাত কে সেও পাগলের মত নাকি ভালবাসে কিন্তু একটু থেকে একটু কিছু হলেই ঠোঁটে বাড়ি। মাধবী নিশিত কে সন্দেহ করতো বলে নিশিত মাধবীর সন্দেহ দুর করতে ডাঃ আব্দুল রাজ্জাক এর পরামর্শে ঔষধ খেয়ে আজ পুরুষত্বহীনতায় পরিণত হয়েছে। পুরুষের অহংকার অলংকার হলো পুরুষত্ব, সেই পুরুষত্ব হারিয়েও নিশিতের মনে কোন দুঃখ নেই কারণ মাধবী তো তাকে আর সন্দেহ করতে পারবেনা। এভাবেই চলছিল বেশকিছু দিন।
নিশিত এর মধ্যে মাধবী কে প্যারামেডিকেল পাস করিয়েছিলেন। সেই সুবাদে মাধবী নিজেই একটা চেম্বার ও করেছে মাধবী। ভালোই চলছিল তাদের জীবন কিন্তু অক্ষমতার কারণে সংসারে কিছু দিতে না পারায় কমবেশি অশান্তি হতো। নিশিত ও পুরুষত্ব হারিয়ে মাধবীকে হারানোর ভয়ে ভীতু। প্রতিনিয়ত তাতে সিসি ক্যামেরা করে রাখে যাতে মাধবী কোন ভুল না করে। একটু রাগারাগি বা অভিমান হলেই উভয়ই কথা বন্ধ রাখতো আর এর মধ্যে কষ্ট লাঘব করতে মাধবী নতুন নতুন বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করে বসে। চিকিৎসক বন্ধুরা তাকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বেশ পরামর্শ সহায়তা করেছে বিধায় বেশ ভালো চিকিৎসক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে মাধবী। শেক্সপিয়ার যথার্থই বলেছিলেন, ছেলে এবং মেয়েদের পরিচয় কখনও বন্ধুত্বে টিকে থাকেনা। একসময় এটা গভীরের দিকে চলে যায়। যদি ও মাধবী সেমন মেয়ে নয় কিন্তু পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি কে কয়দিন ধরে রাখবে। ফেরদৌস নামে এক বন্ধু সম্পর্কে বিস্তারিত সব বলেছিল মাধবীকে নিশিত। তারপর ও মাধবী নিশিতের চোখ ছাপিয়ে কথা বলতো,,, এটা জানতে পেরে নিশিত মাধবীর গায়ে হাত তোলে,,,। নানা অশান্তির পরও মাধবী নিশিতের আবার মিল হয়। নিশিতের হাত ধরে ওয়াদা করে আর ওর সাথে কথা বলবে না কোন প্রকার যোগাযোগ রাখবে না। মাস খানেক না যেতেই আবারও নিশিত মাধবীর বিরোধ সৃষ্টি হলে আবার প্রায় ১ মাস কথা বন্ধ, যোগাযোগ বন্ধ। এরি ফাঁকে চেম্বারে রাজিব নামে এক চিকিৎসক বন্ধু কে রুগী দেখতে চেম্বারে বসায়। এটা জানতে পেরে নিশিত কষ্টে কুকড়িয়ে যায়।

শুধু তাই নয়, আজ হ্যাপি ডে। মাধবী হ্যাপী ডে তে আলিঙ্গন করার পোস্ট করায় নিশিত বুঝানোর চেষ্টা করে এটা করা ঠিক নয়। এটা করলে মানুষ খারাপ বলবে ইত্যাদি। কে শোনে কার কথা অমনি মাধবী সাফ জানিয়ে দিলো এখন থেকে রাজিব সহ আরো বন্ধুরা আসবে। আলিঙ্গন করবে নো প্রোবলেম। ইতিমধ্যে তার এক বন্ধু পোস্টে কমেন্ট ও করেছে। যে বন্ধু এই সুযোগ এর অপেক্ষায় দীর্ঘ দেড় যুগ পথচেয়ে আছে। মাধবীর কথা শুনে নিশিত এর মনে আকাশ পাতাল ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। উপরোন্ত নিশিত এর চরিত্র নিয়ে সাদা গায়ে কাদা লেপে দিলো তাও আবার তারই এক ফুবুর সাথে ( নাউজুবিল্লাহ).
কোরআন স্পর্শ করে নিশিত বলে তুমি আর অপবাদ দিওনা। আল্লাহ সইবেনা। সাদা গায়ে আর কাদা দিওনা। কে শোনে কার কথা তার মাথায় তো রাজিব রাজিব,,,,,,। বুক ভরা কষ্ট নিয়েই নিশিত বলে তুমি রাজিব কে চেম্বারে বসাও। যা খুশী করো তবুও আর আঘাত করোনা। তোমাদের চলার পথে কাটা হতে চাই না।

নিশিত মাধবীর মোবাইল চেক করে জানতে পারে ছোটবেলার এক প্রেমিকের সাথে তার কথা হয়, ফেসবুক বন্ধু। ঐ ফেরদৌসের সাথে ও তার কথা হয়। যদি ও মাধবী সরল মনে তাদের সাথে চিকিৎসার পরামর্শ নিতেই কথা বলে কিন্তু সন্দেহ চরমে ওঠে নিশিত এর মাথায়। সর্বদা সিসি ক্যামেরা করে রাখতে চেষ্টা করে। নামাজ এবং পর্দা সম্পর্কে ব্যাপক কড়াকড়ি আদেশ। তারপর ও উভয়ই সুখেই চলছিল। হটাৎ করে নিশিত এর এক ভাইয়ের বিয়ে। নিশিত মাধবী কে অনেক করে বুঝায় বর্তমানে বিয়ে বাড়িতে আনন্দের নামে যেসব কাজ হয় তা পাপ। তাই চেষ্টা করবে নানা উছিলায় যতটা এড়িয়ে চলা যায়। বিয়ে বাড়ি সবাই কত সাজ, কত হৈ হুল্লা করছে কিন্তু মাধবী নিশিত এর ভয়ে করতে না পারলেও মনে মনে চরম কষ্ট পাচ্ছে। নিশিত তাই বার বার রিং করে খবর নেই মাধবীর কিন্তু অল্প কথায় রেখে দেয় বলে নিশিত এর মনে সন্দেহ হয় বলে বার বার রিং করে। মাধবী ননদ ভাবীদের শাড়ি পড়াতে এবং সাজগোজ করাতে বিজি থাকায় নিশিত কে সময় দিতে পারেনা। নিশিত ও বার বার প্রশ্ন করে কেন খবর নিলেনা এনিয়ে আবার কথা-কাটাকাটি। এক পর্যায়ে মাধবী নিশিত কে চরম ঠোঁটে বাড়ি দেয়, যেমন-
বিয়ের নাটক করেছিস তো, জানিসনা বিয়ে করলে কি কি করা লাগে, মেয়ে জন্মায়সিস, জানিসনা মেয়ে হলে কি কি করা লাগে।
আমি তো ওপরে গিয়ে বিচার দেওয়ার ভাষা আছে তোর আছে তো!!!!!
উত্তর গুলো এখোনিই ভেবে রাখ।
আমি যদি নামাজ নাও পড়ি তোর কোন একতিয়ার নেই ফোরচ করার। কারন তুই আমার জন্য কিছুই করিসনা। আমার মেয়েও যদি তোর কোন কথা না শোনে তাহলে গোর বলার কিছুই নেই, কারন আমার মেয়ের জন্য তুই কিছুই করিসনা,,,
এর উত্তরে নিশিত বলে, কষ্ট নিওনা, সত্যি আমি ব্যর্থ বাবা, ব্যর্থ স্বামী,,,,,। আমারই ভুল, আমায় মাপ করে দিও। খেয়ে নিও। চিন্তা করোনা
পাল্টা মাধবী বলে, সত্যকে স্বিকার করেছো ভালো, আমি খুশি। আর মনে কিছু রাখার দরকার নেই।
শাসন করা তারই সাজে যে ভরনপোষণ দেয়। তুই কি করেছিস আমাদের জন্য,,,,,,,,। এই শেষ আঘাত গুলো সহ্য করতে না পেরে হটাৎ করে অসুস্থ হওয়ায় আমরা আপনার কাছে এনেছি। ভালো হবে তো ডাক্তার বাবু। নিশিত এর চোখের জল ডাক্তার এর মনেও কষ্টে চোখের জল গড়ে পড়েছে। ঔষধ দিয়ে বিধায় দিলাম রুগীকে আর মনে মনে ভাবলাম যে স্বামী তার নিজের জন্য কোনকিছু না চেয়ে শুধু পৃথিবীর সেরা সম্পদে পরিণত করতে চাই তার বৌকে, উভয়কালেই একত্রে থাকার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে। পাপ হবে বলে সারাক্ষণ নানা উপদেশ দেয়, আয়নার মত কে কেমন মানুষ অগ্রীম ধারণা দেয় বৌকে। সেই বৌ কত ভাগ্যবতি বৌ যদি এটা বুঝতো তাহলে বিরোধ না করে এমন বরের জন্য অহংকার করতো।
,,,,,,,,,, অক্ষমতার গ্লানি সইতে না পেরে আজ বেচারা মানসিক ভাবে বিধর্স্ত। সত্যি মনে মনে ভাবলাম সমাজে টাকায় সব। আজ যদি নিশিত এর টাকা থাকতো। নিশিত যদি পরিবারের জন্য অবাধ ব্যয় করতে পারতো তাহলে হয়ত এত লাঞ্চিত হতে হতো না নিশিত কে। সামান্য বার বার ফোন করা নিয়ে এতবড় আঘাত টা না করলেও পারতো মাধবী। মাধবীর জানা উচিত ছিল স্বামী যখন শারীরিক ভাবে অক্ষম হয় তখন বৌ কে একটু বেশী নজরে রাখে,,,,
। স্বামী কে আঘাত করে পরপুরুষ এর সাথে যোগাযোগ করা বা তার চেম্বারে পরপুরুষ কে বসানো এটা মোটেই উচিৎ হয়নি মাধবীর। সেই সাথে কথায় কথায় নিশিত কে ঠোঁটে বাড়ি দেয়াও চরম অপরাধ। স্বামী কে কষ্ট দিলে আল্লাহ কতটা কষ্ট পান এটা জানার জন্য স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অধিকার বইটি পড়ানো দরকার কিন্তু ডাক্তার তাকে আর পাবে কোথায়?
নিশিত অশ্রুসিক্ত নয়নে কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলো জয় হোক তোমার! জয় হোক রাজিব ফেরদৌস গংদের….। আমি তোমার দেয়া সকল অপবাদ মাথায় নিয়ে নিরবে সরে গেলাম তোমার শান্তির জন্য


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Devoloped By WOOHOSTBD